এবার কুমিল্লায় গায়েহলুদের রাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন শারমিন আক্তার (২৩) নামের এক তরুণী। গতকাল শুক্রবার ৫ মে ভোর ৪টায় নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকায় নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেন তিনি। এ খবর শুনে সকালে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান তার প্রেমিক রনি। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোর্শেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে নিহত শারমিন আক্তারের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা সদর উপজেলার কাকিয়ারচর এলাকায়। তারা নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকায় ভাড়া থাকেন। প্রেমিক রনির বাড়ি জেলার আদশ সদর উপজেলার পালপাড়া এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মৃত তাজুরুল ইসলামে ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর বাগিচাগাঁও এলাকায় শারমিনের গায়েহলুদের অনুষ্ঠান চলছিল। হলুদের অনুষ্ঠানে হঠাৎ প্রেমিক রনি তার দলবল নিয়ে এসে হাজির হন। এসময় তিনি শারমিনকে বিয়ে না করার জন্য আকুতি মিনতি জানিয়ে কান্নাকাটি শুরু করেন। হলুদের অনুষ্ঠানে হঠাৎ প্রেমিকের উপস্থিতি এবং বিয়ে না করার আকুতি শোনার পর বিমর্ষ ছিলেন শারমিন। পরে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নিজের শয়ন কক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
এদিকে নিহত শারমিনের ভাবি হাসনাত জাহান ভূঁইয়া প্রীতি জানান, ২০২০ সালের শেষের দিকে বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল এলাকার আসাদুজ্জামান অনিল নামের এক যুবকের সঙ্গে শারমিনের বিয়ে ঠিক হয়। তার ভাই যুক্তরাষ্ট্রে থাকায় ২০২৩ সালের ৫ মে বিয়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। তিনি বলেন, শারমিন হলুদ অনুষ্ঠানের পর পোশাক পরিবর্তনের জন্য নিজের রুমে গিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এ বিষয়ে প্রেমিক রনির মা বলেন, শারমিন আমাদের পুত্রবধূ। কোর্ট ম্যারিজ করে তারা বিয়ে করেছে। কিন্তু আমাদের পরিবারের অবস্থা ভালো না হওয়ায় বউমার পরিবার আমাদের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে রাজি হয়নি। তারা ডিভোর্স ছাড়াই বউমাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিতে চায়। তিনি আরও বলেন, আমাদের পুত্রবধূ দুইমাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমার ছেলেও সকালে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।
এ বিষয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোর্শেদ বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। তবে ঠিক কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা এখনো নিশ্চিত নই। আমরা এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।